কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নে প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে সংখ্যালগু পরিবারের ক্রয়কৃত ৩০শতক জায়গা জোরপুর্বক জবরদখলের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আক্রান্ত পরিবার জড়িতদের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেও গত দুইমাস ধরে কোন প্রতিকার পাচ্ছেনা বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। এ অবস্থায় পুলিশের নিস্কৃয় ভুমিকার কারনে অভিযুক্তরা দখলে নেয়া ওই জায়গায় চারিদিকে বাউন্ডারী ওয়াল তৈরী করে দখল চেষ্টা পাকাপোক্ত করে নিচ্ছেন। এমনকি দখল চেষ্টায় জড়িতদেরকে ডুলাহাজারা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি কৌশলে সহায়তা দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। শনিবার দুপুরে চকরিয়া প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের কাছে এসব অভিযোগ করেছেন ক্রয়সুত্রে জায়গার মালিক রনজিত নাথের স্ত্রী প্রতিমা দেবী । এসময় জায়গার পর অংশিদার মৃত খোকন চন্দ্র নাথের স্ত্রী পাখীবালা নাথ ও পরিবারের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগে ভুক্তভোগী পরিবারের গৃহকর্ত্রী পাখীবালা নাথ ও প্রতিমা দেবী জানান, উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের বগাচত্বর মৌজার বিএস ৯৭নম্বর খতিয়ানের ১৯/১৭১৫ ও ৬৭/১৭১৬নম্বর দাগের জমি হইতে প্রকৃত বিএস মালিকের কাছ থেকে চাহিদা অনুযায়ী দামে ১৯৯৮সালের ২৭ মে তারিখে ১৯০২নম্বর রেজি: দলিল ও একই বছরের ৩জুন তারিখে ২০২২নম্বর রেজি: দলিলসহ দুই দলিলে ৬০শতক জায়গা ক্রয় করেন। তারমধ্যে একটি দলিলে পাখীবালা নাথ ক্রয় করেন ৪০শতক ও অপর দলিলে তার ভাই রনজিত নাথ ক্রয় করেন ২০শতক জায়গা।
ভুক্তভোগী পাখীবালা নাথ জানান, মেয়ের বিয়ের জন্য টাকার প্রয়োজন হওয়ায় তিনি ক্রয়কৃত ৪০শতক জায়গা থেকে ৩০শতক অন্যজনকে বিক্রি করেন। ফলে তার অবশিষ্ট জায়গা থাকে ১০শতক। ওই জায়গার পাশে স্থিত রয়েছে তার ভাই রনজিত নাথের ২০শতক জায়গা। পাখীবালা নাথ সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে জানান, তার অবশিষ্ট জায়গা ও ভাই রনজিত নাথের ক্রয়কৃতসহ দুই পরিবারের ৩০শতক জায়গা প্রথমে ক্রয় করার প্রস্তাব দেন অভিযুক্ত প্রভাবশালীরা। কিন্তু এতে তাঁরা বিক্রি করতে রাজি না হলে স্থানীয় আওয়ামীলীগ কতিপয় নেতাদের দিয়ে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হয়। পরে জায়গা দখলে রাখলে তাদের (সংখ্যালগু পরিবার) কাছ থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করা হয়। তিনি অভিযোগ করেন, এরই জের ধরে সর্বশেষ চলতিবছরের ৫ ফেব্রুয়ারী তারিখ সকালে অভিযুক্ত প্রভাবশালীরা ভাড়াটে দুর্বৃত্তদের ব্যবহার করে দুই পরিবারের ওই জায়গাটি দখলে নেয়। এরপর দুর্বৃত্তরা প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্র প্রদর্শন করে ভয়ভীতি দেখিয়ে সেখানে বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণের কাজ শুরু করেন। ওইসময় বাঁধা দিতে গেলে ভুক্তভোগী পাখীবালা নাথ ও পরিবারের কয়েকজন সদস্যকে বেদম মারধর করেন দুর্বৃত্তরা।
ভুক্তভোগী সংখ্যালগু পরিবার সদস্যরা জানান, হামলা ও জবরদখলের এ ঘটনায় ঘটনারদিন বিকালে পাখীবালা নাথ বাদি হয়ে চকরিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এতে দখলে জড়িত প্রভাবশালী ডুলাহাজারা ইউনিয়নের উলুবনিয়া গ্রামের হাজী জহির উল্লাহ’র ছেলে ছৈয়দ আহমদসহ কয়েকজনকে আসামি করা হয়। বাদি পাখীবালা নাথ দাবি করেন, থানায় অভিযোগ দেয়ার পর প্রায় দুইমাস সময় অতিবাহিত হলেও পুলিশ জড়িতদের বিরুদ্ধে কোন ধরণের ব্যবস্থা নেয়নি। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে তিনি বাধ্য হয়ে গত ২৩মার্চ সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (চকরিয়া সদর সার্কেল) মো.মাসুদ আলমের কাছে নতুন একটি অভিযোগ দায়ের করেন ছৈয়দ আহমদকে একমাত্র বিবাদি করে।
জানা গেছে, সংখ্যালগু পরিবারের অভিযোগটি আমলে নিয়ে সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার মো.মাসুদ আলম তদন্তপুর্বক ভুক্তভোগীদেরকে আইনগত সহায়তা করতে ও ১০দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।
ভুক্তভোগী সংখ্যালগু পরিবার সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, অভিযোগটি থানার ওসি তদন্তের দায়িত্ব দেন এসআই মো.আলমগীরকে। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা উল্টো স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের চাপে অভিযুক্ত প্রভাবশালীদের সাথে যোগসাজস করে অদ্যবদি এব্যাপারে কার্যকর কোন ধরণের ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপারের দেয়া নির্দেশ মতে ১০দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদনও দাখিল করেনি। এ সুযোগে বর্তমানে অভিযুক্তরা দখলে নেয়া ওই জায়গায় চারিদিকে বাউন্ডারী ওয়াল তৈরী করে দখল চেষ্টা পাকাপোক্ত করে নিচ্ছেন। #
পাঠকের মতামত: